চরফ্যাশনে স্কুল ছাত্র বানালেন তিনতলা জাহাজ!

চরফ্যাশনে স্কুল ছাত্র বানালেন  তিনতলা জাহাজ!

প্রযুক্তির মাধ্যমে তিনতলা জাহাজ বানিয়ে আলোড়ন সৃস্টি করেছে ভোলার চরফ্যাশনের দশম শ্রেনীর ছাত্র নয়ন। ক্ষুদে এই বিজ্ঞানী নয়নের উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যমে  আগামিতে আরও অভিনব প্রযুক্তির  উদ্ভাবন করে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছেন। 

জাহাজের প্রতি তলায় রং বেরং লাইটিংয়ে  বৈচিত্র্যময় করা হয়েছে। অত্যাধুনিক রাডার এবং ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে জাহাজটি চালাতে এনালগ সিস্টেমের মতোই মাস্টারের প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্য,  রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যেই চলছে এই  জাহাজ। মুলত এটি এটি জাহাজের আদলে একটি “ডেমো” জাহাজ। প্রাথমিকভাবে এই জাহাজ চালু করা হয়েছে চরফ্যাশনের একটি পুকুরে। বরিশাল—ঢাকাগামী কীর্তনখোলা জাহাজের আদলে একই রকম ডিজাইনে এই জাহাজ তৈরি করেছেন হত দরিদ্র পরিবারের সন্তান স্কুল ছাত্র নয়ন। 

নয়নের উদ্ভাবিত "ডেমো" জাহাজ এক নজর দেখার জন্য নয়নের বাড়িতে উৎসুক মানুষের ভীড়। ক্ষুদে শিক্ষার্থীর বিস্ময়কর আবিষ্কার দেখতে জেলার বিভিন্ন উপজেলার ছোট বড়  সবাই ছুটছেন নয়নের বাড়িতে। এমন উদ্ভাবনে বিস্মিত গ্রামের সবাই। নয়নের প্রতিভার সঠিক বিকাশের জন্য আশু পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান  চরফ্যাশন বাসীর। 

তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,  দীর্ঘ ১০ মাসের প্রচেষ্টায়  রিমোট কন্ট্রোলের এই “ডেমো” জাহাজ তৈরি করে   আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন ক্ষুদে বিজ্ঞানী নয়ন। “ডেমো” জাহাজ আবিস্কারক নয়নের বাড়ি ভোলা জেলার  চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা থানাধীন চরমানিকা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে। চর আইচা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র নয়ন। হত দরিদ্র ক্ষুদ্র মৎস্য ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন ফরাজীর জ্যেষ্ঠ সন্তান। চার ভাই—বোনের মধ্যে সে সবার বড়।

ডেমো" জাহাজটি চালাতে নয়ন নিজেই তৈরি করেছেন একটি শক্তিশালী  রিমোট কন্ট্রোল। জাহাজে লাগানো হয়েছে শক্তিশালী ২টি মোটর। ১২ ভোল্টেজ একটি ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে জাহাজে । মোটর দু'টির সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে দুইটি পাখা। যার মাধ্যমে সামনে—পেছনে চালানো যাচ্ছে। তিনতলা এই ডেমো জাহাজের বিভিন্ন তলায় নানান রংয়ের আলোকসজ্জা। অন্ধকারে চালানোর জন্য সামনে রয়েছে হেড লাইট।

নয়ন বলেন, জীবনে একজন বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন। লেখাপড়ার পাশাপাশি আরও  কিছু বানানোর চেষ্টা আছে। স্কুলে টিফিনের জন্য বাবা—মায়ের কাছ থেকে জমানো ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে ককসিট, প্লাস্টিকের পাইপ, কাগজ, মোটর, ব্যাটারি, বৈদ্যুতিক তার, রিমোট কন্ট্রোলার, পাখা সংগ্রহ করি। পড়ালেখার পাশাপাশি ১০ মাসের প্রচেষ্টায় কীর্তনখোলা জাহাজের আদলে ৭ ফুট দৈর্ঘ্য ৩ ফুট প্রস্থ্য এই জাহাজ। আমার উদ্ভাবিত প্রযুক্তি নির্ভর জাহাজটি কীর্তনখোলা—১০ জাহাজ কোম্পানির মালিককে উপহার দিতে চাই। এতে মালিক আমার এই উপহার গ্রহন করলে জীবনের স্বপ্ন স্বার্থক হবে।