ভোলা-৪ আসনে জ্যাকবকে বিজয়ী করতে ভোটাররা অবিচল | সংবাদ চিত্র

আগামি রবিবার  জাতীয় নির্বাচন-২০২৪ ভোটের সকল প্রস্তুতি শেষ।। কাল বুধবার থেকে সারাদেশে নামছে  এলিট ফোর্স বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর বাকি ৪ দিন। শেষ মূহূর্তে ভোলা-৪ আসনে  প্রচার-প্রচারণায় জ্যাকবের পক্ষে গণজোয়ার সৃস্টি হয়েছে। সভা সমাবেশের মাধ্যমে প্রার্থীরা ব্যাস্ত সময় পার করছেন। এই আসনে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি টানা তিনবার নির্বাচিত আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এমপির ব্যতিক্রমধর্মি প্রচারণায় উৎসবমুখর নির্বাচন। তার সাথে শক্তিশালি প্রার্থী না থাকায় এককভাবে প্রচার চলছে তার পক্ষে। অন্য প্রার্থীদের পোস্টাল সাঁটানোর পরে তাদের মাঠে তেমন একটা প্রচার প্রচারনা নেই। ভোলা-৪(চরফ্যাশন মনপুরা ) মোট ভোটার ৪,৫৩,৬৮৩ জন।   পুরুষ ভোটার ২,৩৮,১৭০ জন, মহিলা ভোটার ২,১৫,৫০৭ জন।মোট কেন্দ্র চরফ্যাশনে ১৩০টি এবং ভোট কক্ষ ৮৯৭, মনপুরায় কেন্দ্র ২৫, ভোট কক্ষ ১৫০টি।ভোট গ্রহনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। আগামী ২৯, ৩০ ও ৩১ ডিসেন্বর তিনদিন ব্যাপি প্রিজাটিং,সহকারি প্রিজাটিং ও পুলিং কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। ভোলা-৪ আসনে নৌকার প্রার্থীসহ  প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন  ৫ জন। এই আসনের টানা তিন বারের সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবের সাথে ৪ প্রতিদ্বন্বী প্রার্থীর জামানত হারনোর সম্ভাবনা রয়েছে।

ভোলা জেলার ৪টি সংসদীয় আসনের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্ববহ চরফ্যাশন-মনপুরা উপজেলা নিয়ে গঠিত ভোলা-৪ আসন। অনেক গুরুত্বপূর্ণ এই আসনে নির্বাচনকে ঘিরে  উৎসবমুখর।  কারণ ভোলার মধ্যে চরফ্যাশন-মরপুরা উপজেলা এখন পর্যটকদের কাছে একটি পরিচিত নাম। বিশেষ করে এ আসনে স্থাপিত জ্যাকব টাওয়ার।  দেশ-বিদেশের অনেক পর্যটক  সৌন্দর্য পরখ করতে ভ্রমণে আসছেন।। একে কেন্দ্র করে গত ১৫ বছরে আসনটিকে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড  হয়েছে। আর এসব উন্নয়ন কর্মকাÐ বর্তমান সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবের হাত ধরেই হয়েছে।

 আসন্ন দাদ্বশ সংসদ নির্বাচনে ভোলা-৪ সংসদীয় আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব সহ প্রার্থী রয়েছে পাঁচজন। অপর প্রার্থীরা হলেন-জাতীয় পার্টির মো. মিজানুর রহমান  হাওলাদার (লাঙ্গল), তৃণমূল বিএনপির মো. হানিফ (সোনালী আশ), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. আলাউদ্দিন (আম) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক আবুল ফয়েজ (মাথাল)। এরমধ্যে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে মাঠে দিন-রাত প্রচার-প্রচারণায় মাঠে দেখা গেলেও অপর চার প্রার্থীর তেমন কোন প্রচারণা দেখা মিলছে না। এদের পোস্টারও চোখে পড়ছে না। প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ-সদস্য আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ১৫ বছর একটানা ক্ষমতায় থেকে শক্ত ভিত গড়ে তুলেছেন নৌকা প্রতীকের অনুসারিরা। বিপরীতে কোণঠাসা হয়ে ভোটের মাঠের বাহিরে রয়েছেন বিএনপি।

আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব বলেন, গত ১৫ বছরে চরফ্যাশন-মনপুরায় যে উন্নয়ন হয়েছে তার ১০ভাগও বিগত সরকারের আমলে কোন এমপি করতে পারেনি । এই আসনে উল্লেখযোগ্য্য কোন কাঁচা রাস্তাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। এছাড়া, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয়েছে। যা আগে কেউ করতে পারেনি। আরো উন্নয়ন চাইলে নৌকার বিজয়ের বিকল্প নেই। ফলে আমার বিশ্বাস ভোটারটা আমাকে ফের নির্বাচিত করবেন। নির্বাচিত হলে পুরো আসনটিকে আরো আধুনিকায়ন করা হবে। চরফ্যাশন মনপুরা আরও উন্নয়ন করা হবে। স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক আবুল ফয়েজ জানান, আমি কলেজ শিক্ষক ছিলাম। আমার অনেক ছাত্র ও অভিভাবক ভোটার রয়েছেন। তারা আশাকরি আমাকে ভোট দেবেন। আমি নির্বাচিত হলে চরফ্যাশন-মনপুরাকে আরো আধুনিকায়ন কররো। ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী মো. আলাউদ্দিন জানান, আমার অনেক রিজার্ভ ভোট রয়েছে। সুষ্ঠ নির্বাচন হলে তারা আমাকে ভোট দেবেন। আমি নির্বাচিত হতে পারলে এলাকাবাসীর স্বার্থে যা যা করা প্রয়োজন সবই করবো।

বিগত নির্বাচনের আর্কাইভস রেকর্ডে দেখা যায়, ভোলা-৪ আসনে থেকে ১৯৭৩ ও ১৯৭৯ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এমএম নজরুল ইসলাম নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টি থেকে সাদ জগলুল ফারুক নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অধ্যক্ষ এমএম নজরুল ইসলাম  নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত  নির্বাচনে জয়লাভ করেন বিএনপির প্রার্থী নাজিম উদ্দিন আলম। এরপর বিএনপির কাছ থেকে এই আসনটি হাত ছাড়া হয়ে যায়। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী নাজিম উদ্দিন আলমকে হারিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব বিনাপ্রতিদ্ব› দ্বিতীয় নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৮ সালের  নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী নাজিম উদ্দিন আলমকে হারিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য হন আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব। এই আসনে ভোটারদের কাছে হেভিওয়েট প্রার্থী রেকর্ড সংখ্যক উন্নয়নের আইকন আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবের বিকল্প নেই।