চরফ্যাশনে বাংলাদেশ আ.লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত-|সংবাদ চিত্র

চরফ্যাশনে বাংলাদেশ আ.লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত-|সংবাদ চিত্র
bangladesh awomilig
চরফ্যাশনে বাংলাদেশ আ.লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত-|সংবাদ চিত্র

যথাযোগ্য মর্যাদায় ভোলার চরফ্যাশনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ৭৩ তম প্রতিষ্ঠাবর্ষিকী পালিত হয়েছে।

আজ ২৩জুন/২২ বৃহস্পতিবার ৮টায় চরফ্যাশন উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ দলীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলণ করে জাতীয় সংগীত পরিবেশন,জাতীর জনকের প্রতিকৃতিতে পুস্পমাল্য অর্পনের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচী শুরু করে।এরপর বাদ মাগরিব দলীয় কার্যালয়ে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হবে।
কর্মসূচীতে অংশ নেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও আ.লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি জয়নাল আবেদিন,উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম ভিপি,সহ সভাপতি অধ্যক্ষ কায়সার আহমেদ দুলাল,উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সম্পাদক মোঃ হোসেন মিয়া,
অধ্যাপক জামাল উদ্দিন মহাজন,আবু জাহের ভূইয়া, পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মনির আহমেদ শুভ্র,উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আহম্মদ উল্লাহ, আওয়ামী ওলামালীগের সভাপতি মাওঃ মঈন উদ্দিন আহম্মেদ,
সেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি আবদুল মান্নান,সম্পাদক মোঃ হাসান, যুবলীগ সভাপতি সাইদুর রহমার স্বপন,সাধারণ সম্পাদক আল এমরান,পৌর যুবলীগ সভাপতি হাজি শহিদুল্লাহ,সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি ইউসুফ হোসাইন ইমন,ছাত্রলীগ সভাপতি মেহেদি হাসান সোহাগ,সম্পাদক মোঃ আসিফ মৎসজীবি লীগ সভাপতি  শফি উল্লাহ হাওলাদার সম্পাদক মোঃ মফিজুল ইসলাম প্রমুখ।
এবারে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর মুল আকর্ষন স্বপ্নের পদ্মাসেতু।দলীয় পতাকায় আবৃত সেতুর ছবি।দেশের টাকায় নির্মিত পদ্মাসেতু বিশ্বের বিস্ময়।আগামি ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মাসেতু উদ্বোধন করে  বিশ্বে ইতিহাস সৃস্টি করবেন।

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের গৌরবময় ইতিহাস|

১৯৪৯ সালের ২৩ ও ২৪ জুন ঢাকার কেএম দাস লেনে অবস্থিত ঐতিহাসিক ‘রোজ গার্ডেন’ প্রাঙ্গণে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর অনুসারী মুসলিম লীগের প্রগতিশীল কর্মীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ নামে পাকিস্তানের প্রথম বিরোধী দলের আত্মপ্রকাশ ঘটে। সংগঠনটির প্রথম কমিটিতে মওলানা ভাসানী সভাপতি ও শামসুল হক সাধারণ সম্পাদক এবং জেলে থাকা অবস্থায় যুগ্ম-সম্পাদক নির্বাচিত হন শেখ মুজিবুর রহমান।

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ধর্মনিরপেক্ষ-অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি, শোষণমুক্ত সাম্যের সমাজ নির্মাণের আদর্শ এবং একটি উন্নত সমৃদ্ধ আধুনিক, প্রগতিশীল সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা বিনির্মাণের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দর্শনের ভিত্তি রচনা করে আওয়ামী লীগ। যার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৫৫ সালের কাউন্সিলে অসাম্প্রদায়িক নীতি গ্রহণের মাধ্যমে সংগঠনটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ’।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ শুধু এ দেশের প্রাচীন ও সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠনই নয়, বাংলাদেশের রাজনীতির মূলধারাও। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইতিহাস একসূত্রে গাঁথা। ১৯৪৮ সালে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে সূচিত ভাষা আন্দোলন ১৯৫২ সালে গণজাগরণে পরিণত হয়। অব্যাহত রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার তরুণ সংগ্রামী নেতা শেখ মুজিবুর রহমান সেই সময়ে কারান্তরালে থেকেও ভাষা আন্দোলনে প্রেরণাদাতার গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেন।
ভাষা আন্দোলনের বিজয়ের পটভূমিতে ১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টের কাছে মুসলিম লীগের শোচনীয় পরাজয় হয়। তারপরও প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব থেকে দূরে রাখা হয়। নানা ঘটনা প্রবাহের মধ্য দিয়ে ১৯৫৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে প্রদেশে প্রদেশে কোয়ালিশন মন্ত্রিসভা গঠিত হয়। পূর্ব বাংলায় আওয়ামী লীগ সরকার নিশ্চিত করে এক মুক্ত গণতান্ত্রিক পরিবেশ।

আওয়ামী লীগের উদ্যোগেই মাতৃভাষা বাংলা অন্যতম রাষ্ট্রভাষার আনুষ্ঠানিক মর্যাদা লাভ করে। ২১শে ফেব্রুয়ারি ঘোষিত হয় জাতীয় ছুটির দিন ‘শহীদ দিবস’। আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্যোগেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নির্মাণকাজ প্রায় সম্পন্ন হয়। প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলা একাডেমি। মাত্র ২০ মাসের রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেয়ে চরম খাদ্যাভাব ও দুর্ভিক্ষ থেকে বাঙালি জাতিকে রক্ষা করাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে  আওয়ামী লীগ সরকার যে সফলতা অর্জন করে তাতে জনগণের কাছে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা বহু গুণ বেড়ে যায়। সে সময় মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করে জনগণের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন এবং তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠন গড়ে তোলার কাজে আত্মনিয়োগ করেন।

এরপর আইয়ুব খানের এক দশকের স্বৈরশাসন-বিরোধী আন্দোলন, ’৬২ ও ’৬৪-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৪-এর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রতিরোধ, ’৬৬-এর ঐতিহাসিক ৬-দফা আন্দোলন, ’৬৮-এর আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান, ৬-দফাভিত্তিক ’৭০-এর নির্বাচনে ঐতিহাসিক বিজয়, ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম” খ্যাত কালজয়ী ভাষণ ও পরবর্তীতে পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন, ২৫ শে মার্চের কালরাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যার পর ২৬ শে মার্চের প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বাঙালি জাতি স্বাধীন জাতি-রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। অবশেষে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দীর্ঘ ৯ মাসের এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ৩০ লাখ শহীদের রক্ত আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের।