র‍্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা অত্যন্ত গর্হিত কাজ - প্রধানমন্ত্রী

র‍্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা অত্যন্ত গর্হিত কাজ - প্রধানমন্ত্রী

সংবাদ চিত্র ডেক্সঃ প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে র‍্যাব। কিন্তু এ বাহিনীর কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে বিনা দোষে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, যা অত্যন্ত গর্হিত কাজ বলে মনে করি। এর চেয়েও কষ্টের বিষয় হচ্ছে, আমাদের দেশের কিছু মানুষ এই নিষেধাজ্ঞাকে বাহবা দিচ্ছে।

আজ সোমবার র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।  

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ অপরাধে জড়ালে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কিন্তু র‍্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে যারা স্যাংকশন দিল, তাদের দেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। বিশেষ করে আমেরিকায় এই ব্যবস্থা নেই। তারা বঙ্গবন্ধুর খুনীদের আশ্রয় দিয়েছে, নাগরিকত্ব দিয়েছে। ওইসব অপরাধীদের দেশে ফেরাতে বারবার যোগাযোগ করেও তা সম্ভব হয়নি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, র‍্যাব জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছে। তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। মাদক একটি ব্যাধি, সারা বিশ্ব আজ এই ব্যাধিতে আক্রান্ত। র‍্যাবের ধারাবাহিক অভিযানে আজ মাদক অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। চরমপন্থীরা আত্মসমর্পণ করেছে এবং তাদের আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের মাধ্যমে পুনর্বাসন করা হয়েছে। জলদস্যুরা আত্মসমর্পণ করে এখন পরিবারের সঙ্গে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছে। আমাদের দুর্ভাগ্য যে ইসলাম একটি শান্তিপূর্ণ ধর্ম, কিন্তু জঙ্গিবাদের মাধ্যমে এই শান্তি বিনষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়াদের দ্রুত শনাক্ত করে র‌্যাব তাদের আইনের আওতায় এনেছে।

তিনি বলেন, রোজা সামনে রেখে কিছু মজুদদার নিত্যপণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। র‍্যাব নিয়মিত বাজার মনিটরিং ও অভিযানের মধ্য দিয়ে নিত্যপণ্যের বাজার স্বাভাবিক রাখতে ভূমিকা পালন করছে।  

পরে প্রধানমন্ত্রী র‍্যাবের বিভিন্ন অবকাঠামোর উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

র‍্যাবের সম্মিলিত কার্যক্রমকে স্মরণীয় করে রাখার লক্ষ্যে র‍্যাব সদস্যদের জন্য একটি নতুন ‘ইনসিগনিয়া’ প্রবর্তন করা হয়েছে। ১৮তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সোমবার ২৮ মার্চ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল র‍্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ইনসিগনিয়া ব্যাজ পরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে তা উদ্বোধন করেন।

র‍্যাব ফোর্সেস ৮টি বাহিনী ও সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত একটি চৌকস এলিট ফোর্স যেখানে বিভিন্ন বাহিনী থেকে আগত সদস্যরা একটি  আগত সদস্যরা একটি নির্দিষ্ট সময় সেবা প্রদান করে নিজ বাহিনীতে ফিরে যান।  

জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বেড়ে যাওয়ায় ২০০৪ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিশেষায়িত বাহিনী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে র‍্যাব ফোর্সেস। প্রতিষ্ঠার পর এই বাহিনী জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডসহ অপরাধ দমন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। নিয়মিত অভিযানের মাধ্যমে মাদকের বিস্তার রোধেও র‍্যাব ফোর্সেস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকে রেখেছে।

র‍্যাবের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে সুন্দরবন ও উপকূলীয় অঞ্চলে সন্ত্রাসী কার্যক্রম শূন্যের কোটায় নিয়ে আসার ফলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করেন। অপরাধ দমন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় অনবদ্য ভূমিকার জন্য র‍্যাব এখন সাধারণ মানুষের নিকট আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীক।