এডিপি প্রকল্প তদারকির দায়িত্ব ডিসিকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান প্রকৌশলীদের

এডিপি প্রকল্প তদারকির দায়িত্ব ডিসিকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান প্রকৌশলীদের

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিভুক্ত (এডিপি) প্রকল্প পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়নের দায়িত্ব ডিসিদের দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে প্রকৌশলীদের সংগঠন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটশন, বাংলাদেশ (আইইবি)।  

বৃহস্পতিবার রাজধানীর আইইবি কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করে তারা।

জানা যায়, গত ১৮ জানুয়ারি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে ডিসিদের অধীনে একটি বিভাগ খোলার নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়, ওই বিভাগ জেলায় এডিপিভুক্ত প্রকল্পগুলো কাজের পরিবীক্ষণ করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে।

মানববন্ধনের সভাপতিত্ব করেন আইইবি'র সার্ভিসেস অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারম্যান এস এম মনজুরুল হক মঞ্জু।

 

তিনি বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া অযৌক্তিক ও উন্নয়নের প্রতিবন্ধক।

এই মানববন্ধনের আয়োজনকে 'আমলাতন্ত্রের জ্বালাতনের প্রতিবাদে প্রাথমিক বার্তা' হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সারা দেশে আজ প্রকৌশলীরা একজোট হয়েছেন। ডাক্তার ও কৃষিবিদরাও আমাদের আন্দোলনে সামিল হয়েছেন। অবিলম্বে এই সিদ্ধান্তের চিঠি প্রত্যাহার করা না হলে পেশাজীবীদের মর্যাদার প্রয়োজনে কর্মবিরতিসহ কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, আমরা রাষ্ট্রের কর্মচারী, আমলাতন্ত্রের গোলাম নই।

তার দাবি, সারা দেশে ইঞ্জিনিয়াররা অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের অন্যতম বাস্তবায়নকারী তারাই। তাদের কাজের মূল্যায়ন ও পরীবিক্ষণ করতে হলে যে ধরনের কারিগরি যোগ্যতার প্রয়োজন, সেটি ডিসি-এডিসিদের নেই।

তিনি আরো বলেন, আমরা বিসিএসের একটিমাত্র ক্যাডারের অনুগত নই।

আপনারা ডিসি-এডিসিরা প্রকল্প মূল্যায়নের নামে সিনিয়র প্রকৌশলীদের ডেকে নিয়ে যাবেন, অপমান করবেন, সেটা হতে দেওয়া হবে না। তা-ও যদি আপনাদের কারিগরি বিষয়ে জ্ঞান থাকতো, তাহলে মেনে নিতাম। আপনারা বিসিএস করেছেন, আমরাও ক্লাসের ফার্স্টবয় ছিলাম।

আইইবির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, নির্বাহী প্রকৌশলীরা সারা দেশে কাজ করে থাকেন। তাদের কাজের কাজ মূল্যায়ন-পরীবিক্ষণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ রয়েছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মূল্যায়ন ও পরিবীক্ষণ বিভাগের কাছে তারা জবাবদিহিতা করেন।

আমলাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। আপনাদের কাজ আপনারা করেন। আপনাদের কাজের মধ্যে একটা হচ্ছে প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ। সেটা করতে না পারার কারণে বহু প্রকল্পের কাজ আটকে যায়। বাস্তবায়নে ধীরগতি হয়।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ডিসি সম্মেলনে জেলা প্রশাসকদের পক্ষ থেকে এ ধরনের দাবি করা হলে প্রধানমন্ত্রী ও পরিকল্পনামন্ত্রী এ প্রস্তাব নাকচ করে দেন। তারপরও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কীভাবে এ ধরনের একটি চিঠি দিয়ে 'অযৌক্তিক' একটি সিদ্ধান্তের কথা জানাতে পারে? এ চিঠি বাতিল না করা পর্যন্ত জেলা প্রশাসকদের প্রকল্প সংক্রান্ত কোনো তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবে না প্রকৌশলীরা।

মানববন্ধনে আইইবির সদস্য ছাড়াও পাবলিক ওয়ার্কস ইঞ্জিনিয়ারর্স অ্যাসোসিয়েশন, সড়ক ও জনপথ ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন, পাবলিক হেলথ ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন, এলজিইডি ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশন, পানি বিদ্যুৎ প্রকৌশলী সমিতি, রেলওয়ে প্রকৌশলী সমিতির নেতারা সংহতি জানান।