দেহ ব্যবসাকে ‘পেশা’ হিসাবে স্বীকৃতি দিল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট-সংবাদ চিত্র

দেহ ব্যবসাকে ‘পেশা’ হিসাবে স্বীকৃতি দিল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট-সংবাদ চিত্র
দেহ ব্যবসাকে ‘পেশা’ হিসাবে স্বীকৃতি দিল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট-সংবাদ চিত্র

সংবাদ চিত্র আন্তর্জাতিক ডেস্ক রিপোর্ট: যৌন পেশাকে স্বীকৃতি দিয়ে যুগান্তকারী রায় দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। দেশটির আইনের আওতায় এখন থেকে যৌনকর্মীরা অন্য সব পেশার মতো সমান মর্যাদা ও সুরক্ষা পাবেন। একই সঙ্গে নিজ ইচ্ছায় যেসব প্রাপ্তবয়স্ক এই পেশায় এসেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করতে ও বাধা দিতে পারবে না পুলিশ।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাওয়ের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছেন। পর্যবেক্ষণে আদালত জানান, ভারতের সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদের অধীন সব নাগরিকের মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনের অধিকার রয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের আদেশে বলা হয়, ‘যৌনকর্মীরা আইনের অধীন সমান সুরক্ষা পাবেন। “বয়স” ও “সম্মতির” ওপর ভিত্তি করে ফৌজদারি আইন সবার ক্ষেত্রে সমানভাবে প্রয়োগ করতে হবে। একজন যৌনকর্মী প্রাপ্তবয়স্ক এবং নিজের ইচ্ছায় এ পেশায় এসেছেন, এমনটা জানা গেলে তাঁদের ওপর হস্তক্ষেপ ও ফৌজদারি পদক্ষেপ নেওয়া থেকে পুলিশের বিরত থাকতে হবে।’

একই সঙ্গে আদেশে বলা হয়, যৌনপল্লিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের সময় কোনো যৌনকর্মীকে গ্রেপ্তার, শাস্তির মুখোমুখি করা, হয়রানি ও অনৈতিকভাবে দোষারোপ করা যাবে না। কারণ, যৌনকর্ম বেআইনি নয়, শুধু যৌনপল্লি চালানো বেআইনি।

মা যৌনকর্মী বলে তাঁর সন্তানকে তাঁর কাছ থেকে আলাদা করা যাবে না বলে আদেশে উল্লেখ করেছেন আদালত। বলেছেন, ‘কোনো ছোট শিশুকে যৌনপল্লি বা যৌনকর্মীর সঙ্গে দেখলেই তাকে পাচার করে আনা হয়েছে, তা ধারণা করা ঠিক হবে না। যদি কোনো ক্ষেত্রে একজন যৌনকর্মী কাউকে তাঁর ছেলে বা মেয়ে দাবি করেন, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য পরীক্ষা করা যেতে পারে। তবে জোর করে তাদের আলাদা করা যাবে না।
পাশাপাশি কোনো যৌনকর্মী যদি তাঁর বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের অভিযোগ নিয়ে পুলিশের কাছে যান, তাহলে তা অন্য দশজনের করা মামলার মতোই দেখতে পুলিশকে বলা হয়েছে। বিশেষ করে যদি যৌনকর্মী তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তা বা অপরাধের অভিযোগ নিয়ে আসেন, তাহলে দ্রুত তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করে তদন্ত শুরু করতে হবে। প্রায়ই দেখা যায়, পুলিশ যৌনকর্মীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। যেন তারা এমন একটি শ্রেণি যে তাদের অধিকারের স্বীকৃতি নেই। যৌনকর্মীদের পরিচয় যেন প্রকাশ্যে না আসে, সে ব্যাপারেও গণমাধ্যমকে নির্দেশনা দিয়েছেন।

যদি কোনো যৌনকর্মী এই শিশুকে নিজের সন্তান বলে দাবি করে তাহলে সংবেদনশীলতার সঙ্গে তাদের এ ক্ষেত্রে, একজন সাধারণ মানুষ যেমন সুবিধার অধিকারী, একজন যৌনকর্মীর ক্ষেত্রেও তার অন্যথা করা যাবে না।