মুক্তিযুদ্ধে  নারীদের অবদান ও স্বাধীনতা | সংবাদ চিত্র

মুক্তিযুদ্ধে  নারীদের অবদান ও  স্বাধীনতা |  সংবাদ চিত্র

বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল তাতে পুরুষদের পাশাপাশি নারীদেরও অবদান ও ছিল অনস্বীকার্য। কিন্তু স্বাধীনতা যুদ্ধে নারীদের অবদানের কথা কোথাও তেমনভাবে উল্লেখ্য করা হয় না। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক যেকোনো সভা অনুষ্ঠান মিছিল মিটিংয়ে সকলে বলে থাকেন, ৩০ লক্ষ শহীদের রক্ত এবং ২ লক্ষ মা বোনের সমভ্রম এর বিনিময় আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এতে স্বাধীনতা যুদ্ধে নারীদের অবদান আংশিকভাবে ফুটে ওঠে। 

স্বাধিনতা যুদ্ধে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও কিন্তু সম্মুখ যুদ্ধ অংশগ্রহণ করেছিল। এছাড়া নারীরা ক্যাম্প ও হাসপাতালগুলোতে ডাক্তার ও সেবিকা হিসেবে কাজ করেছেন। নিজে না খেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য খাদ্য সংরক্ষণ করে রেখেছেন এবং নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়েও মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও অস্ত্রশস্ত্র পৌঁছে দিয়েছেন। আর শুধু তাই নয় নারীরা শরণার্থীর শিবির ও ক্যাম্পগুলোতে গান গেয়েও মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল বৃদ্ধি করেছেন। 

এক্ষেত্রে উল্লেখ্যযোগ্য মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন এপ্রিল মাসের সানজিদা খাতুনের নেতৃত্বে গঠিত বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রামের শিল্পী সংস্থা। মুক্তিযুদ্ধকালীন নারীরা সম্মুখ যুদ্ধ কিংবা আরালে থেকে যখন যেভাবে পেরেছেন সেভাবেই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন এক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধাদের মায়েদের কথা না বললেই নয় যেমন শহীদ রুমির মা জাহানারা ইমাম কিংবা শহীদ আজাদের মা সাফিয়া বেগম মুক্তিযুদ্ধে তাদের সন্তানদের অনুপ্রাণিত করেছিলেন। তারা তাদের নিজের সন্তানদের জীবনের বিনিময় লক্ষ্য মায়ের সন্তানের জীবন বাঁচিয়েছেন। 

১৮ নভেম্বর ২০১২ জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য মতে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ২০৩ জন নারী অংশ নিয়েছিলেন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী দিনাজপুরে ২১ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৫ জন, যশোর ও গোপালগঞ্জে ৯ জন, সুনামগঞ্জ ও পঞ্চগড়ে ৮ জন, সিলেট ও বরিশালে ৭ জন নারী মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন।
নারী মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বীর প্রতীক খেতাব পেয়েছেন তিনজন- ১৯৭২ সালে ক্যাপ্টেন সিতারা বেগম; এরপর ১৯৭৩ সালে তারামন বিবি ও ১৯৯৭ সালে খেতাব পেয়েছেন কাঁকন বিবি। তারামন বিবি ও কাঁকন বিবি ২০১৮ সালে প্রয়াত হয়েছেন এবং দীর্ঘদিন তাঁরা দুজনই ছিলেন বিস্মৃতির আড়ালে।

স্বাধীনতা যুদ্ধে পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের অবদান ও ছিল অনেক। তাই আমাদের সকলের উচিত তাদের অবদানের জন্য তাদেরকে  সম্মান ও স্বীকৃতি দেওয়া। 

লেখিকা : জাররিন ফাতেমা মেধা। 
শিক্ষার্থী, চরফ্যাশন সরকারি টি. ব্যারেট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়।