সুপারের বিরুদ্ধে সিআইডিতে তিন মামলা | সংবাদ চিত্র

সুপারের বিরুদ্ধে  সিআইডিতে তিন মামলা  | সংবাদ চিত্র

চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের স্বাক্ষর জাল করে জনবল নিয়োগে এমপিও ভূক্তির আবেদন করে বিপাকে পরেছেন ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার হাজারীগঞ্জ মোহাম্মদীয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সুপার।

গত ৬ জুলাই ঘোষিত এমপিওর তালিকায় ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার হাজারীগঞ্জ মোহাম্মদীয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসা সহ ২৩ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও ভূক্ত হয়েছে। মাদ্রাসার সুপার মাওঃ রুহুল আমিন প্রতিষ্ঠাকালীন ১৫ জন শিক্ষক-কর্মচারীকে বাদ দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করে। নিয়োগ সংক্রান্ত  কাগজপত্র জাল করে মাদ্রাসা অধিদপ্তরে  জনবল এমপিও ভূক্তির জন্য একাধিক অনলাইনে আবেদন করা হয়। যা পরবর্তীতে বাতিল করা হয়েছে।

মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষক কর্মচারীরা এমপিও ভূক্তির তালিকা থেকে বঞ্চিতরা ভোলা জেলার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে জালিয়াতির ঘটনায় ৩টি মামলা হয়েছে।

মামলা নং এমপি ৫৬৯/২২, ৫৫৩/২২ ও ৫৪৬/২২। আদালত তিন মামলা আমলে নিয়ে ভোলা সিআইডি তদন্তের নির্দেশনা প্রদান করে। আদালতের আদেশের পর সিআইডি (ভোলা) ইতোমধ্যে  সুপারের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে।

মামলা সূত্রে জানা যায় উক্ত মাদ্রাসায় সৃজিত শিক্ষক-কর্মচারীদের ০৩/১০/২০০৪ ও ১০/১২/২০০৪ ইং তারিখে দৈনিক ইনকিলাব ও একটি আঞ্চলিক পত্রিকার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখানো হয়েছে। উক্ত তারিখে দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকায় ওই  তারিখের পেপারে  উক্ত মাদরাসার কোন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাপা হয়নি।

নিয়োগ জালিয়াতির সাথে চাঁদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় তজুমদ্দিন এর ২০০৪/৪১ তাং ২০/১০/০৪ তারিখের স্বাক্ষরিত ডিজির প্রতিনিধির পত্রটিও জালিয়াতি করা হয়েছে। উক্ত নিয়োগে ভোলা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের প্রাপ্যতা ও ডিজির প্রতিনিধির পত্রেও জাল জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে।

২০০৪ সালে তৎকালীন চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিরাজুল হক ও ২০০৮ সালে তৎকালিন উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মোঃ মোস্তফা কামাল উক্ত মাদ্রাসার সভাপতি থাকাকালীন সুপার  মাও রুহুল আমিন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের কাগজপত্রে সভাপতির (ইউএনও)স্বাক্ষর জালিয়তি করে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় লিপ্ত হন।

নিয়োগ কালীন প্রাক্তন সভাপতি চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সিরাজুল হক বলেন, তিনি ওই মাদ্রাসার কোন নিয়োগের কাগজে  আমি স্বাক্ষর করিনি,  তিনি এ বিষয়ে মাদ্রাসা অধিদপ্তরকে অবহিত করেছেন।

২০০৮ সালে  উক্ত মাদরাসার প্রাক্তন সভাপতি  চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোস্তফা কামাল বলেন, তার মেয়াদকালীন সময়ে ওই মাদ্রাসার কোন নিয়োগ কার্যক্রম হয়নি।  নিয়োগে তার স্বাক্ষর জালিয়াতির বিষয়টি মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরকে অবহিত  করা হয়েছে। 

হাজারিগন্জ মোহাম্মদিয়া মহিলা দাখিল মাদরাসার সুপার মাও মোঃ  রুহুল আমিন বলেন, রাজনৈতিক  কারনে আমি মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাকালিন কিছু শিক্ষক-কর্মচারী বাদ দিয়ে নতুন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছি। ইউএনও’র স্বাক্ষর জাল সহ পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও ডিজির প্রতিনিধির পত্র জাল জালিয়াতির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

চরফ্যাশন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মহিউদ্দিন বলেন, হাজারীগঞ্জ মোহাম্মদিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সুপার কর্তৃক এমপিও ভুক্তির আবেদনকৃত শিক্ষক- কর্মচারীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া জাল জালিয়াতির মাধ্যমে করা হয়েছে মর্মে  তার বিরুদ্ধে  তিনটি মামলা হওয়ায় উক্ত মাদ্রাসার শিক্ষক কর্মচারীদের এমপিও ভূক্তির আবেদন  না পাঠাতে মাদরাসা অধিদপ্তর থেকে  সাময়িকভাবে ভাবে স্থগিত  করা হয়েছে।