ঈদুল আযহায় ভ্রমন পিপাসুদের জন্য চরফ্যাশনে নতুন ঠিকানা | সংবাদ চিত্র

ঈদুল আযহায়  ভ্রমন পিপাসুদের জন্য  চরফ্যাশনে নতুন ঠিকানা | সংবাদ চিত্র
ঈদুল আযহায়  ভ্রমন পিপাসুদের জন্য  চরফ্যাশনে নতুন ঠিকানা | সংবাদ চিত্র


এম. আবু সিদ্দিক।।
কাল পবিত্র ঈদুল আযহা। ঈদের ছুটিতে আনন্দ উপভোগ করতে দেশের নানা প্রান্ত ঘুরে বেড়ান ভ্রমন পিপাসুরা। ঈদের টানা ছুটিতে হাজারো পর্যটকে মুখরিত হয়ে ওঠে ভোলার চরফ্যাশনের দর্শনীয় স্থান গুলোতে। ইতিমধ্যে ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের বরণ করতে প্রস্তুত পর্যটন কর্তৃপক্ষ।আনন্দ উপভোগ করতে ভ্রমন পিপাসুদের নতুন  ঠিকানা তেতুলিয়া নদীর কোল ঘেষে চরফ্যাশনের পশ্চিমাঞ্চল এলাকা  অধ্যক্ষ নজরুল নগর ইউনিয়নে অপার সম্ভাবনাময় শারেকখালির অদুরে বেড়িবাঁধ ব্লক।নানা রঙে সাজানো  নদীর পাড় এবার পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে। 

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ভোলা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবের দৃষ্টি নন্দন জেনিক এন্ড জেনিল খামার বাড়ির অদুরে তেঁতুলিয়া নদীর পাড়ে অবস্থিত এই নতুন পর্যটন এলাকা।

এখনও এই পর্যটন এলাকার  নাম রাখা হয়নি। তবে স্থানীয়রা নাম দিয়েছে শারেকখালী পর্যটন পার্ক। বাবুরহাট বেড়ীবাধ এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধে ব্লকগুলো ঈদ উপলক্ষে ইতিমধ্যে নানান রঙে সাজানো হয়েছে। ঈদের  পরে দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠবে এই পর্যটন এলাকা।ধারনা করা হচ্ছে  ঈদের ছুটিতে এবার এই এলাকায় পর্যটকদের ঢল নামবে।

স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালুর মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী চরফ্যাশন উপজেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে ঘিরে পর্যটন শিল্পের নতুন  দিগন্ত উন্মোচিত হবে। এতোদিন সড়কপথে যোগাযোগ ব্যবস্থায় দীর্ঘ সূত্রিতার কারণে পিছিয়ে ছিলো এখানকার পর্যটনখাত। পদ্মা সেতুকে ঘিরে এখন নৈসর্গিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ এই অঞ্চলকে পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করতে চলছে নানা সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ। 
পূর্বে মেঘনা আর পশ্চিমে তেঁতুলিয়া নদী। দক্ষিণ-পশ্চিমে বুড়াগৌরাঙ্গ, দক্ষিণে রয়েছে বঙ্গোপসাগর। সাগরমোহনার দ্বীপ চর উপজেলা চরফ্যাশন। নীল আকাশ, সবুজ বন, রুপালী ইলিশ, দুরন্ত হরিণ, পাখির ঝাঁক-সবই শোভা বাড়িয়েছে এখানকার প্রকৃতির। এখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য। শঙ্খচিল আর মেঘ ছুয়ে যাওয়া বলাকাদের ডানা ঝাপটে দিগন্ত থেকে দিগন্তে ছুটে চলা এবং মেঘনার অসীম জলরাশি আর নদীর ঢেউয়ের দোলায় চিকমিক করা বালি কণা ছুয়ে দেখতে যে কারও মন ছুইয়ে যাবে।


অন্যদিকে বেতুয়ায় মেঘনার পাড়ে গড়ে ওঠা প্রশান্তি পার্কের রেস্টিং বেঞ্চ,বেতুয়া কায়াকিং পয়েন্ট আর গোলঘরসহ নদীর কিনারায় রেলিং ধরে চা ও কপি’তে চুমুক দিয়ে জলের আলতো ঢেউয়ে শতশত চিলের মাছ শিকারের চিত্র দেখতেও মন্দ লাগবেনা কারোই।

বেতুয়ায় ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর বাস্তবায়নে নির্মিত বেড়ি বাঁধের ঢালে ঘুরতে আসছে শতশত পর্যটক। নদী পথে যাতায়াতের কারনে অনেকে আবার আসতে চায় না।
চরফ্যাশন শহরে আছে জ্যাকব টাওয়ার, শেখ রাসেল স্কয়ার শিশুপার্ক। জ্যাকব টাওয়ারে উঠলে মনে হবে আকাশের কাছে আপনার অবস্থান, পুরো উপজেলা আপনার চোখের সামনে। সবুজের ছাদ। নীল আর সবুজের মাঝে আপনার প্রসারিত দৃষ্টি। ২২৫ ফুটের উচ্চতায় ১৬ তলা বিশিষ্ট জ্যাকব টাওয়ার পরিদর্শন করেই পর্যটকদের গন্তব্য থাকে বঙ্গপোসাগরের কুলঘেঁষে জেগে ওঠেছে দেশের অন্যতম পর্যটন স্পট কুকরি-মুকরি সী বিচে । চরফ্যাশন থেকে বাস,মাইক্রো কিংবা মোটরসাইকেলে আপনাকে যেতে হবে কচ্চপিয়া ঘাট। সেখান থেকে ট্রলার,স্পিডবোট কিংবা লাইনের লঞ্চে আপনি কুকরিমুকরি ম্যানগ্রোভ(শ্বাসমূলীয়) বনে যেতে পারেন। এ বনে হরিণ ছাড়াও নানা রকম বন্য প্রাণী এবং নদীতে ডলফিন জাতীয় ভোঁদর দেখতে পাবেন। মনে হবে আপনি সুন্দরবনে এসেছেন। চারদিকে শতসহ¯্র পাখির ডাক। এ বনে আছে নারকেল বন,বিস্তীর্ণ বালিয়ারি বিচ। 

চর কুকরি-মুকরির কেওরা ও ম্যানগ্রোভ বনে রয়েছে ২৭২ প্রজাতির উদ্ভিদ, চিত্রা হরিণ, বানর ও বুনো মহিশ সহ ৪৫ প্রজাতির প্রাণী এবং প্রায় ২০৯ প্রজাতির পাখি। বাংলাদেশের মালদ্বীপ খ্যাত প্রকৃতির এ স্বর্গরাজ্যে পর্যটকদের জন্য রয়েছে রেস্টিং বেঞ্চ, ঝুলন্ত সেতু, জিপ ট্রাকিং, মাকরশার জাল, চাইনিজ রেস্তোরাসহ হোম স্টে সার্ভিস। কুকরিমুকরি থেকেই আপনি আরও দক্ষিণ পূর্বে ঢালচর। ঢালচরেই আছে তাড়–য়া সি-বীচ। নদীপথে,সবুজ বনের বাঁকের দুই পাশে আপনার সঙ্গী হবে নানা রকম হাঁস,বক,পানকৌড়ি,হটটিটি আর মাছরাঙ্গা জলচর পাখির দল। শীতের সাগর মোহনা আর মেঘনা-তেতুলিয়ার জল শান্ত-স্বচ্ছ। অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বিনোদনের পর্যাপ্ত সুযোগ ও পর্যটক আকর্ষণে বহুমাত্রিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হলে কুকরি-মুকরি ও তাড়ুয়া সমুদ্র সৈকত, মেঘনা কোলে অবস্হিত প্রশান্তি পার্ক থেকে সরকার বছরে লক্ষ লক্ষ  টাকার রাজস্ব পাবে।