ঈদযাত্রায় দক্ষিণাঞ্চলে নৌপথে এবার যাত্রীদের ভীড় নেই | সংবাদ চিত্র

ঈদযাত্রায় দক্ষিণাঞ্চলে নৌপথে এবার  যাত্রীদের ভীড় নেই | সংবাদ চিত্র

এতদিন দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল বিভাগের ছয়টি জেলার যাতায়াতের একমাত্র ভরসা ছিল লঞ্চ। গত ২৫ জুন পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এর প্রভাব পড়েছে এ অঞ্চলের নৌ-রুটে। এ রুটের লঞ্চগুলোর ডেকে কিছু যাত্রীর দেখা মিললেও, কেবিনে নেই যাত্রীর চাপ। অর্ধেক কেবিন ফাঁকা রেখেই  লাভজনক রুট বরিশাল  কুয়াকাটা ভোলা চরফ্যাশন বেতুয়া রুটে চলছে বিলাসবহুল লঞ্চগুলো। আগামী ১০ জুন ঈদুল আজহা উপলক্ষেও ঘরমুখো মানুষের ভিড় নেই লঞ্চে। যাত্রী কম হওয়ায় ডেকের ভাড়া কমিয়েছে কিছু লঞ্চ মালিকরা।

সদরঘাটের বরিশাল ভোলা অঞ্চলের লঞ্চঘাটে যাত্রীদের তেমন কোনো ভিড় নেই। অন্যান্যবারের মতো এবারের দৃশ্যপট আলাদা। হাঁকডাক-শোরগোল করে লঞ্চে যাত্রী ওঠানোর প্রতিযোগিতা করছেন কর্মচারীরা। এ সময় ডেকে কিছু  যাত্রী উঠলেও কেবিনে যাত্রীসংকট দেখা গেছে। অগ্রিম টিকিট কাটারও কোনো চাপ নেই।
পদ্মা সেতুর প্রভাবে যাত্রী কমেছে বলে জানালেন লঞ্চের কেরানী ও কর্মচারীরা। সুরভী-৭ লঞ্চের কেরানী মারুফ  বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পরদিন থেকে যাত্রীসংখ্যা কিছুটা কমেছে।

তিনি বলেন, ডেকে স্বাভাবিক থাকলেও কেবিনের যাত্রী খুবই কম। তবে আরও দু-একদিন গেলে ঈদযাত্রীর চাপ বাড়বে। নতুন সেতু হওয়ায়, এখন মানুষ শখের বশে পদ্মা সেতু হয়ে অনেকে বাসে বাড়ি যাচ্ছে। ঈদের কিছুদিন আগে-পরে ঘরমুখো মানুষের প্রকৃত অবস্থা জানা যাবে।

পারাবত-১২ লঞ্চের সুপারভাইজার বাবুল বলেন, যারা লঞ্চের যাত্রী, তারা লঞ্চেই যায়। তবে ধনী ব্যক্তি যারা আগে বিলাসবহুল কেবিনে যেতো, পদ্মা সেতু হওয়ায় তারা এখন ব্যক্তিগত গাড়িতে যাচ্ছে। এতে করে কেবিনের যাত্রীর সংখ্যা কমেছে। যারা পরিবারসহ যাচ্ছে, তারা লঞ্চেই আসছে।

সদরঘাটের ভোলাগামী এক যাত্রী বলেন, অন্যান্যবার এ সময় থেকে ঈদের যাত্রীর ভিড় থাকে।পদ্মা সেতু চালুর ফলে এবার  লঞ্চঘাটে তেমন একটা  ভীড় নেই।লঞ্চের কেবিন সহজে মিলে,তবে তারা ভাড়া কমায়নি।ঈদের পরে ভাড়া না কমালে আমরা সড়ক পথে যাবো।নদিতে মজা আলাদা,এবারও লঞ্চেই যাচ্ছি। বাসে গেলে কম সময়ে যাওয়া যায়।যখন মন চায় বাসে যাবো। দুই রুটে এখন দুই সুবিধা।আমাদের দাবি ঢাকা-ভোলা-চরফ্যাশন রুটে লঞ্চের ভাড়া না কমালে পদ্মাসেতু দিয়ে আসা যওয়া করবো।

ভোলাগামী এক যাত্রী বলেন, চাকরির প্রয়োজনে লঞ্চে বেশি আসা-যাওয়া করতে হয়। এতে একটু সময় ও টাকা বেশি লাগলেও লঞ্চে স্বস্তি আছে, বাসে কিন্তু সেটা নেই। এখন আবার শুনতেছি যে, লঞ্চে কেবিন ও ডেকের ভাড়া আগের দামেই নিচ্ছে।তারা ঈদ সামনে রেখে ভাড়া কমায়নি। ঈদের পরে ভাড়া কমাবে এি খবর শুনেছি।

লঞ্চ মালিক সমিতির সহ-সভাপতি আবুল কালাম খান বলেন, পদ্মা সেতু হওয়াতে মানুষ এখন সেটি দেখার জন্যেও বাসে করে যাওয়া আসা করছে।ফলে লঞ্চে যাত্রী অনেকটা কম।যাত্রীদের লঞ্চমুখি করতে ঈদেরপর ভাড়া কমাতে মালিকরা  নতুন সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

চরফ্যাশন গামী(বেতুয়া) এক যাত্রী জানান, গুলিস্তান থেকে সদরঘাট আসতে রাস্তার যে বেহাল দশা আর জ্যাম, এসব কারণে মানুষ এখন অনেকে মিলে মাইক্রোবাস রিজার্ভ করে পদ্মা সেতু হয়ে বরিশালে এসে  বিভিন্ন রুটে যাচ্ছে।অনেকেবরিশাল থেকে অল্প সময়ে স্পিড বোটে ভোলা যেতে পারে।সময় কম ভাড়া কম দুদিক সাশ্রয়ী।

যাত্রী কমায় লঞ্চের ভাড়া কমানো হবে কী না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা আমরা পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নিব।ভাড়া কমানো হলে যাত্রীরা যেতে আগ্রহী হবে বরে মনে করি। তবে ঈদের পর সকল মালিকরা মিলে আলোচনা করবো। তবে ডেকের ভাড়া স্বাভাবিক থাকবে। কেবিনের ভাড়া কমানোর সম্ভাবনা রয়েছে।