চরফ্যাশনে বারোমাসি তরমুজ চাষ করে আলোচনায় আকতার মহাজন | সংবাদ চিত্র

চরফ্যাশনে  বারোমাসি তরমুজ চাষ করে আলোচনায় আকতার মহাজন   | সংবাদ চিত্র
চরফ্যাশনে  বারোমাসি তরমুজ চাষ করে আলোচনায় আকতার মহাজন   | সংবাদ চিত্র

[√] এম আবু সিদ্দিক | ভোলার চরফ্যাশনের উপকূলীয় এলাকায় জনপ্রিয় হচ্ছে মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ। পরিবেশবান্ধব এ পদ্ধতি ব্যবহার করে বিভিন্ন রঙের তিন জাতের তরমুজ চাষ করে সফল চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা গ্রামের কৃষক ‘মানিক পাটোয়ারী ও আমিনাবাদ গ্রামের আক্তার মহাজন’। এ পদ্ধতিতে বছরের যে কোনো সময় একাধিকবার তরমুজ উৎপাদন করা সম্ভব।

পরিবার উন্নয়ন সংস্থা (এফডিএ) এবং পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর যৌথ উদ্যোগে তাদের কৃষি ইউনিটের মাধ্যমে প্রথম এই পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারেন চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা গ্রামের কৃষক মানিক পাটোয়ারী।

পরে তিনি পরিবার উন্নয়ন সংস্থা (এফডিএ) কৃষি ইউনিটে যোগাযোগ করে মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ উৎপাদনে উৎসাহিত হন। মালচিং পদ্ধতি অনুযায়ী, মালচিং পেপারে মুড়িয়ে অঙ্কুরিত বীজ জমিতে রোপণ করা হয়। এ পদ্ধতিতে প্রথমে মালচিং পলিথিন দিয়ে একটি বীজতলা নির্মাণ করা হয়। এরপর তরমুজের বীজ সেখানে স্থাপন করা হয়।
এবার মালচিং পেপার ছিদ্র করে বীজ অঙ্কুরিত হওয়ার পর মাচা করে লতা ঝুলানো হয়। বীজগুলো পলিথিন দিয়ে মোড়ানো থাকে, তাই কোনো কীটপতঙ্গ আক্রমণ করতে পারে না। ফলে কীটনাশক ব্যবহারেরও প্রয়োজন হয় না। একই কারণে ক্ষতিকর সূর্যালোকও এর ভিতরে প্রবেশ করতে পারে না।
সাধারণ পদ্ধতিতে অনেক সময় বৃষ্টি হলে বীজতলা বা খেত থেকে সার ধুয়ে যায়। মালচিং পেপার দিয়ে মোড়ানো থাকায় এখানে সেই আশঙ্কাও নেই। সাধারণ পদ্ধতির চেয়ে নতুন এ পদ্ধতিতে গাছগুলো দেড়গুণ তাড়াতাড়ি বেড়ে ওঠে।
তার মতো আগ্রহী হয়ে আমিনাবাদ ইউনিয়ন হালিমাবাদ গ্রামের একজন আদর্শ কৃষক আকতার হোসেন মহাজন শুরু করেন মালচিং পদ্ধতিতে বিভিন্ন রঙের তরমুজ চাষ। প্রতি মৌসুমে বিভিন্ন জাতের সবজি ও ফলমূল চাষাবাদে এসেছে তার সফলতা।

তবে দেশের অন্যান্য জায়গার মতো এখানেও নতুন জাতের তরমুজের চাহিদা থাকায় প্রথমবারের মতো তার খামারে মালচিং পদ্ধতিতে বারোমাসি তরমুজ চাষ শুরু করেছেন তিনি। সবুজ, কালো ও হলুদ রঙের এই তিন জাতের তরমুজগুলো দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি খেতেও সুস্বাদু।
আকতার হোসেন মহাজন বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সহযোগিতায় ইউনাইটেড নামের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান থেকে উচ্চ ফলনশীল বারোমাসি তরমুজের বীজ সংগ্রহ করেন। এরপর প্রাথমিকভাবে এসএসিপি প্রকল্পের আওতায় হাইব্রিড জাতের এই তরমুজের চাষ শুরু করেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে মালচিং পদ্ধতিতে জ্যৈষ্ঠ মাসের মাঝামাঝি ৮ শতক জমিতে ১২০টি ট্রেতে ৩৫০টি তরমুজের চারা রোপণ করেন। রোপণের ৬০ থেকে ৬৫ দিনের মধ্যেই গাছের তরমুজ বিক্রয়ের উপযোগী হয়। প্রতিটি তরমুজের ওজন হয়েছে ২ থেকে ৩ কেজি। প্রাথমিক সাফল্যের পর বেশি আকারে এই জাতের বারোমাসি তরমুজ চাষাবাদ করবেন বলে জানান কৃষক আকতার হোসেন।

সূত্র - বাংলাদেশ প্রতিদিন ১৫/১০/২০২২