ভোলা জেলায় ডেঙ্গুর প্রসার দুইজনের মৃত্যু | সংবাদ চিত্র
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাজেরা বেগম (৩৪) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি উপজেলার দুলারহাট থানাধীন নীলকমল এলাকায়।
এদিকে ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে সে মারা যায়। তার বাড়ি বোরহানউদ্দিন উপজেলায়।
ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরুর পর চরফ্যাশন উপজেলায় এটি প্রথম মৃত্যুর ঘটনা । পাশাপাশি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে এখানকার সরকারি-বেসরকারিসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৫২ জন। অনেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র চলে গেছেন। সবমিলিয়ে এ উপজেলায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ১০০ হবে বলে আশংকা করছেন চিকিৎসকরা।
জানা যায়, মৃত হাজেরা বেগম গত বুধবার সন্ধ্যা ৭ টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে এসে ভর্তি হওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়। তিনি ৩০ জুলাই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর বেসরকারি একটি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে যায়। হঠাৎ তার শরীর অস্বাভাবিক ফুলে গিয়ে খিচুনি শুরু হয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক হাজেরাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আধুনিক হাসপাতালের পরিচালক তিতুমীর মিয়াজি জানান, উপসর্গ নিয়ে আমাদের হাসপাতালে আসা রোগীদের ১০ জনের মধ্যে ৩ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। দিন দিন আক্রান্তের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। গ্রামাঞ্চলের অনেক মানুষ ডেঙ্গুর উপসর্গ নিয়ে পরীক্ষা না করে বাসায় বসে থাকে। শরীরে অতিমাত্রায় ছড়িয়ে পড়লে হাসপাতালে নিয়ে আসে। এদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কা জনক।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মাহাবুব কবির বলেন, ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার জন্য জন্য আমরা সার্বক্ষণিক সচেষ্ট রয়েছি।
তিনি বলেন,কয়েকটি ইউনিটকে ডেঙ্গু ইউনিট হিসেবে চালু করা হয়েছে। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে প্রথমবার ডেঙ্গু-তে আক্রান্ত রোগীর বিশেষ কোন উপসর্গ বা লক্ষণ দেখা যায় না। শুধু অল্প কিছু ক্ষেত্রেই রোগের প্রভাব গভীর হয়। তাই কারো সামান্য উপসর্গ দেখা দিলে অল্প সময়ের মধ্যে হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষা (পিসিআর) করাতে সকলের নিকট অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে ভোলা প্রতিবেদক জানান, ভোলার অন্যান্য উপজেলা গুলোতে উদ্বেগ জনক হারে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ইতোমধ্যে ভোলা সদর হাসপাতালে এক ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাকালে অবনতি ঘটলে ঢাকা নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়েছে। জনবল এবং শয্যা সংকটের কারনে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমসিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বুধবার রাতে চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধিন ডেঙ্গু আক্রান্ত হাজেরা বেগম (৩৪) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার রাত ৮টায় চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে এসে মারা যান তিনি। মৃত হাজেরা বেগমের বাড়ি চরফ্যাশন উপজেলার দুলারহাট থানাধীন নীলকমল ইউনিয়নে।
নিহতের আত্মীয়রা জানান, গত ৩০ জুলাই শরীরে জ্বর নিয়ে চরফ্যাশনে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার ডেঙ্গু ধরা পড়ে। তিনি ডাক্তার দেখিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়িতে চলে যান। বুধবার হঠাৎ তার শরীর অস্বাভাবিক ফুলে যাওয়ায় রাতে তার স্বজনরা চরফ্যাশন হাসপাতালে নিয়ে যায়।চিকিৎসা নিতে এসে হাসপাতালের সিঁড়ির উপরে উঠার সময়ে খিচুনি উঠে তিনি সিঁড়িতেই মারা যান।
চরফ্যাশন হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ শোভন বসাক জানান, এপর্যন্ত চরফ্যাশনে ৪৫ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত।ত্দের অনেকে হাসপাতালে ভর্তি।আবার অনেকে উন্ঢানত চিকিৎসার জন্য ঢাকা গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এছাড়াও চরফ্যাশনের প্রাইভেট হাসপাতালে আরও ২৭জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে বলে সেসব হাসপাতালের তথ্য সুত্রে জানা গেছে। অনেকে উন্নত সেবা পেতে ঢাকা বরিশাল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।গরিব রোগীরা মফস্বলের হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।