আতঙ্ক বাড়াচ্ছে মাঙ্কিপক্স-সংবাদ চিত্র

আতঙ্ক বাড়াচ্ছে মাঙ্কিপক্স-সংবাদ চিত্র

প্রায় ২০ বছর পর ফের একবার আতঙ্ক ছড়াচ্ছে মাঙ্কিপক্স। মার্কিন এক নাগরিকের শরীরে ধরা পড়েছে সেই ভাইরাস। যা নিয়ে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে মার্কিন-মুলুকে। ওই ব্যক্তির ট্র্যাভেল হিসস্ট্রি বলছে, সম্প্রতি নাইজেরিয়া থেকে ফিরেছেন। আর এরপরেই শরীরে বেশ কিছু সমস্যা ধরা পড়ে। আর পরীক্ষা করতেই জানা যায়, ওই ব্যক্তি মাঙ্কিপক্সএ আক্রান্ত।

এই মুহূর্তে স্থিতিশীল হলেও আইসোলেশনে রাখা হয়েছে তাকে। এই ঘটনা সামনে আসার পরেই কার্যত একটা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, নাইজেরিয়া থেকে ফেরার সময় ওই ব্যক্তির সংস্পর্শে যারা এসেছেন তাদের খোঁজ চলছে। সে দেশের বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র, হাসপাতালগুলোকে এই বিষয়ে অ্যালার্ট করা হয়েছে।

এটি একটি বিরল অসুখ। এমনটাই বলছে ডাক্তাররা। পস্ক জাতীয় এক ধরনের ভাইরাল। খুব দ্রুত এই রোগ একজনের শরীর থেকে অন্য জনের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। মূলত ড্রপলেট, আক্রান্ত কোনো পশু কিংবা অ্যানিম্যাল প্রোডাক্ট থেকে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। 
শুধু তাই নয়, কাশি, কফ, রক্তের মাধ্যমেও মানব শরীরের একজনের দেহ থেকে অন্যজনের দেহে ছড়িয়ে পড়তে পারে। কিন্তু কেন এই ভাইরাসকে মাঙ্কিপক্স বলা হচ্ছে। গবেষকরা জানাচ্ছেন, বাদরের মধ্যে প্রথম এই ভাইরাস পাওয়া যায়। আর এরপর থেকেই এই ভাইরাসকে মাঙ্কি ভাইরাস বলা হচ্ছে। 

মূলত আফ্রিকাতে এই ভাইরাসের সূত্রপাত। ১৯৭০ সালে কঙ্গোতে এই ব্যক্তির শরীরে প্রথম এই ভাইরাসের নমুনা পাওয়া যায়। এরপর মার্কিন-মুলুকে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে ২০০৩ সালে। কুকুরের মাধ্যমে এই রোগ সে দেশে ছড়িয়ে পড়েছিলো। যদিও এরপর থেকে আর সে দেশে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর সামনে আসেনি। নতুন করে টেক্সাসে ফের সন্ধান মিলেছে।

উপসর্গ এবং চিকিৎসা: 

জ্বরের মতো-ই এই রোগের উপসর্গ। এছাড়াও মুখ এবং গোটা শরীরে র‍্যাশ বের হতে দেখা যাচ্ছে। দুই থেকে চার সপ্তাহ এই ভাইরাস থাকে শরীরের মধ্যে। তবে সে অর্থে কোনো চিকিৎসা নেই এই রোগের। তবে আমেরিকাতে এই ভাইরাসের জন্যে একটা ভ্যাকসিন আছে। স্মল পক্সের ক্ষেত্রেও যদিও সেই ভ্যাকসিন দেয়া হয়ে থাকে।

যেভাবে মাঙ্কিপক্স ছড়িয়ে পড়ে: 

খরগোশ, ইদুরসহ বিভিন্ন ছোট প্রানীর মধ্যে এই ভাইরাস পাওয়া যায়। এই সমস্ত জীব যখন কোনো মানুষকে কামড়ায় কিংবা আছড়ে দেয় তখন এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। এছাড়াও চিকিৎসকরা বলছেন, কোনো পশু যদি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয় সেই সময় তাদের কাছাকাছি ঘুরলেও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 

এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের অ্যানিম্যাল প্রোডাক্ট থেকেও এই ভাইরাস মানব শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। এছাড়াও খুব সহজে হাচি, কাশির মাধ্যমে এক জনের শরীর থেকে অন্যজনের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি ড্রোপলেটের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে রোগ। চোখ, মুখ কিংবা নাকের মাধ্যমে এই ভাইরাস শরীরে ঢুকতে পারে। পাশাপাশি কোনো মানুষ আক্রান্ত হলে তার সংস্পর্শে গেলেও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।