২০২৩ সালে বিশ্বে খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে, খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে: শেখ হাসিনা

২০২৩ সালে বিশ্বে খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে, খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে: শেখ হাসিনা

নিত্যপণ্যের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে দেশবাসীকে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্ব সম্প্রদায় আগামী বছরে একটি গভীর সংকটের আশঙ্কা করছে। খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। এটি এখন আমাদের জন্য অনিবার্য এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।


মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় যুক্ত হন।

তিনি বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে যে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিচ্ছে তার মধ্যেই দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। ’


প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে তার সাম্প্রতিক সফরের কথা উল্লেখ করে বলেন, এই সফরে তিনি বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধান এবং বিভিন্ন সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক আলোচনা করেছেন। রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অনেক দেশের রাষ্ট্রপ্রধান এবং সরকারপ্রধানদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সেখানে সবাই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, ২০২৩ সালে একটি গুরুতর দুর্ভিক্ষ হতে পারে। তখন অর্থনৈতিক মন্দা আরও গভীর হবে এবং খাদ্যসংকট দেখা দেবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেক দেশে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। সুতরাং আমাদের খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে এবং খাদ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

সেই সঙ্গে খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে হবে। আমাদের একটা সুবিধা আছে যে আমাদের জমি অনেক উর্বর এবং যেখানেই বীজ বপন করা হয় সেখানেই কিছু উৎপন্ন হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও এটা বলতেন। ’
জনগণকে অপচয় কমানো এবং সঞ্চয়ের অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি তিনি সবাইকে কঠোর পরিশ্রম করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো অপ্রয়োজনীয় খরচ বাড়াব না। বরং আমরা বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পানি, গ্যাস ইত্যাদি ব্যবহারে আরও সাশ্রয়ী এবং সচেতন হব। ’


তিনি দেশের প্রতিটি পরিবারকে তাদের সাধ্যমতো সঞ্চয় করার অনুরোধ জানান। এটি সরকারের জন্যও প্রযোজ্য বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘অন্তত যে অর্জনটা আমরা করেছি, উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি, এই মর্যাদাটা ধরে রেখে বাস্তবায়ন করে আমরা যেন সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারি। যাতে আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি। ’ উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্টদের আবারও স্পষ্ট নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমাদের যে প্রকল্পগুলো আমরা হাতে নিচ্ছি, প্রত্যেকটা প্রকল্প গ্রহণের আগে আমাদের কাছে অনেক ধরনের প্রস্তাব আসে। অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থাও প্রস্তাব নিয়ে আসে। সেখানে আমাদের যেটা করতে হবে, কোন প্রকল্প বাস্তবায়ন করলে আমার দেশের মানুষের উপকার হবে, তার থেকে আমরা কিছু অর্জন করতে পারব সেটা দেখতে হবে। অহেতুক একটা প্রকল্প নিয়ে অনেক টাকা পেলাম দেখে সেখানে ঝাঁপ দেওয়ার দরকার নেই। 
প্রকল্প বাছাইয়ের ক্ষেত্রে খুব সতর্কতার সঙ্গে প্রকল্প গ্রহণের নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে প্রকল্প থেকে রিটার্ন আসবে, আমরা কিছু আহরণ করতে পারব, দেশের উন্নয়নে লাগাতে পারব, উন্নয়নের কাজে লাগবে, সে ধরনের প্রকল্পই আমরা গ্রহণ করব।