পাঁচ মাস পরে মামলার পূনঃ তদন্তে গৃহবধু চৈতির লাশ উত্তোলন | সংবাদ চিত্র

পাঁচ মাস পরে মামলার পূনঃ তদন্তে গৃহবধু চৈতির লাশ উত্তোলন | সংবাদ চিত্র

ভোলার চরফ্যাশনে গৃহবধু শাশ্বতী রায় চৈতির মৃত্যুর ৫ মাস পর মামলা পুনঃ ময়না তদন্তের জন্য কবর থেকে তার লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার উচ্চ আদালতের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিট্রেট ও সহকারী কমিশনার(ভূমি) ও পিবিআই পুলিশ পরিদর্শকের উপস্থিতে ওসমানগঞ্জ ইউনিয়নের হিন্দু পাড়া শ্মাশানের কবর থেকে  গৃহবধু চৈতির লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। 
বিএম কলেজের এম,এস,সির শেষ বর্ষের  মেধাবী শিক্ষার্থী গৃহবধু শাশ্বতী রায় চৈতির ১বছর আগে একই গ্রামের  উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মানস মজুমদার শাওনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।পরে তাদের দুজনের পারিবারিকভাবে  বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামী শাওন,শশুর সমির চন্দ্র মজুমদার ও শ্বাশুরী নিয়তি রানীর নির্যাতনের  শিকার হন গৃহবধু।
গত ৫ মার্চ রাতে পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের স্বামী মানোষ মজুমদার শাওনের ঘর থেকে  রাতে গলায় ফাঁস লাগানো চৈতির ঝুলন্ত  লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ।
চৈতির বাবা মার অভিযোগ পুলিশ নিহত গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করে লাশের অনেক ডকুমেন্ট গোপন করে ময়না তদন্তের জন্য  লাশ ভোলা মর্গে পাঠায়।
পরের দিন ৬ মার্চ  চৈতির শোকাহত  বাবা সুভাষ চন্দ্র রায় বাদী হয়ে থানায়  একটি মামলা দায়ের করে। মামলার পরে  গণমাধ্যমকর্মিদের কাছে চৈতির বাবা অভিযোগ করেন ওই সময়ে দায়িত্বে নিয়োজিত ওসি তদন্ত রিপন সাহা  মামলাকে প্রভাবিত করেছেন।তিনি বলেন,আসামী পক্ষের সাথে যোগসাজসে চৈতি হত্যাকান্ডকে আত্নহত্যা বলে নিজ দায়িত্বে থানায় মামলা লিখে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে নেয়।লাশের পোস্ট মর্টেমে যে সব আলামত  ভোলায় পাঠানো দরকার ছিল তিনি তা পাঠাননি,ফলে পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট আসামীদের পক্ষে যায়।হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার ভূমিকাও ছিল রহস্যময়।

এই হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহনে শহরে মানববন্ধন হয়েছে।

মামলার আসামী চৈতির স্বামী মানস মজুমদার শাওন,শ্বশুর সমির মজুমদারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।কিছুদিন পরে সমির মজুমদার  জামিনে  বেরিয়ে আসে।এরপরে জামিন পেয়ে যান শাশুড়ী নিয়তি রানী। 

বাদী পক্ষকে মামলার ভবিশ্যত নিয়ে আসামী সমির হরিবাড়ি মোড়ে প্রকাশ্য উপহাস করে।থানায় দায়েরকৃত মামলায় তাদের কিচ্ছু  হবেনা।
চৈতির মৃত্যু নিয়ে তার স্বামী পরিবারের লোকজন থেকে বেড়িয়ে আসে রহস্যের বেড়াজাল। শুরু হয় ঘটনার নাটকীয় নতুন মোড়।প্রভাব বিস্তার করে থানায় দায়েরকৃত মামলা ও পোস্ট মর্টেম রিপোর্টের প্রতি অনাস্হা জানিয়ে গত ২০ মার্চ  সুভাস চন্দ্র দাস ভোলা নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল দমন আদালতে  চৈতি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বিবাদীদের প্রভাব বিস্তারে গত ২৩ এপ্রিল মামলার ময়না তদন্ত রির্পোট আত্মহত্যা আসলে নিহতের বাবা  পুনঃ ময়না তদন্তের জন্য আদালতে একটি আবেদন করেন। বিজ্ঞ আদালত বাদীর আবেদন আমলে নিয়ে গত ১ জুন আদালত নিহত গৃহবধু শাশ্বতী রায় চৈতির লাশ পুনঃ ময়না তদন্তের জন্য  পিবিআই(পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) বরিশালকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
আদালত নির্দেশে  আজ মঙ্গলবার নির্বাহী ম্যাজিট্রেট সহকারী কমিশনার(ভূমি) আবদুল মতিন খাঁন ও পিবিআই(পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) বরিশালের পুলিশ পরিদর্শক শহিদুল ইসলামের উপস্থিতে লাশের পুনঃ ময়না তদন্তের জন্য  ওসমানগন্জ শ্মাশান থেকে গৃহবধুর চৈকির লাশ উত্তোলন করা হয়।

পিবিআই(পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক শহীদুল ইসলাম বলেন,আদালতের নির্দেশে গৃহবধুর লাশ উত্তোলন করে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।